Header Ads

Header ADS

৩২বিট বনাম ৬৪বিট অপারেটিং সিস্টেম। এগুলো আসলে কি?

৩২বিট বনাম ৬৪বিট অপারেটিং সিস্টেম। এগুলো আসলে কি?
আমরা অনেকেই কম্পিউটার বা মোবাইলে ৩২বিট অথবা ৬৪বিট অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করি। আমরা এটাও ভাবি যে ৬৪বিট, ৩২বিট থেকে অনেক ভালো। আসলে কেন ভালো এবং কি জন্য ভালো এটা আজকে আপনাদের পার্থক্য করে দেখাবো।

কম্পিউটার এর প্রসেসরের মেমোরিতে(রেজিস্টারে) সবকিছুই বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা হয়। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে ২টি অংক ব্যবহার করা হয় ০ এবং ১। আমরা যে সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করি সেটাকে বলা হয় দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি এবং এর অংকগুলো হচ্ছে ০ থেকে ৯। যেহেতু এখানে দশটি অংক আছে সেহেতু দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির বেস বা ভিত্তি হল ১০। আর যেহেতু কম্পিউটার ০ এবং ১ ছাড়া কিছুই বোঝেনা তাই এই সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি হল ২। ০ আর ১ বলতে সার্কিটের অবস্থা বুঝানো হয়। ০ মানে হল অফ এবং ১ মানে হল অন। কম্পিউটার সিস্টেমে এই প্রত্যেকটি অংককে বলা হয় বিট। যদি আমরা এক বিট কম্পিউটিং এর কথা বলি তাহলে এই বিটকে দুই ভাবে সাজানো যাবে যথা- ০,১ অর্থাৎ 2¹। যদি আমরা দুই বিট কম্পিউটিং এর কথা বলি তাহলে এই বিটকে চার ভাবে সাজানো যাবে যথা- ০০,০১,১০,১১ অর্থাৎ 2². তাহলে যদি nবিট কম্পিউটিং হয় সেক্ষেত্রে আমরা এটাকে প্রকাশ করতে পারি 2 power n। 

৩২ বিটের কথা বলেন তাহলে এর মান হবে ২পাওয়ার৩২ অর্থাৎ ৪২৯৪৯৬৭২৯৬ 
৬৪ বিটের এর ক্ষেত্রে মান হবে ২পাওয়ার৬৪ অর্থাৎ ১৮৪৪৬৭৪৪০৭৩৭০৯৫৫১৬১৬ যা অনেক বেশি।

৮বিট = ১ বাইট
১০২৪ বাইট = ১ কিলোবাইট
১০২৪ কিলোবাইট = ১ মেগাবাইট
১০২৪ মেগাবাইট = ১ গিগাবাইট
১০২৪ গিগাবাইট = ১ টেরাবাইট
১০২৪ টেরাবাইট = ১ পেটাবাইট
১০২৪ পেটাবাইট = ১ এক্সাবাইট
১০২৪ এক্সাবাইট = ১ যেটাবাইট
১০২৪ যেটাবাইট = ১ ইয়োটাবাইট
১০২৪ ইয়োটাবাইট = ১ ব্রন্টোবাইট
১০২৪ ব্রন্টোবাইট = ১ জিয়োপবাইট


তার মানে বিট যত বেশি হবে সেটা তত বড় কম্পিউটিং সাপোর্ট করবে এবং চিপ নিঃসন্দেহে খুব ভালো মানের হবে। ১৯৭০ সালের ইন্টেলের ৮০৮০ চিপ ছিলো ৮ বিটের। এএমডি ২০০৩ সালে ৬৪বিট চিপ বাজারে আনে। ৬৪বিটের প্রথম স্মার্টফোন ছিলো অ্যাপল ৫এস(A7) এর। ৬৪বিট কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমে আপনার নিশ্চয় দেখে থাকবেন Program Files দুইটা থাকে। একটা থাকে Program Files নামে আরেকটা থাকে Program Files(x64) নামে। ৩২বিট সিস্টেমে কিন্তু একটা Program Files ই থাকে। এটা কেন করা হয় জানেন? একটা ৩২বিটের সফটওয়্যারকে যদি আপনি ৬৪বিটের Program Files এ ইন্সটল করেন তাহলে দেখবেন সফটওয়্যারটি হয় ওপেন হচ্ছে না অথবা নয়ত অন্য রকম আচরণ করছে। এটার কারন হচ্ছে ৩২বিট ও ৬৪বিটের Program Files আলাদা আলাদা আর্কিটেকচারে তৈরি করা হয়। আর তাই কোন সফটওয়্যার রান করাতে হলে ৩২বিট বা ৬৪বিট এর আর্কিটেকচারের নিয়ম মেনে তৈরি করতে হয়। ৩২বিট আর্কিটেকচারের সফটওয়্যার কখনো ৬৪বিটে চলবে না। একটা সফটওয়্যার যখন ইন্সটল করা হয় তখন এটি উইন্ডোজের অনেক রিসোর্স ব্যবহার করে যেগুলোকে DLL File বা Dynamic Link Library বলে। DLL File গুলো একেক আর্কিটেকচারের জন্য একেক রকম। তাই আপনি ৩২বিটের সফটওয়্যারকে কখনো ৬৪বিটের DLL এর সাথে ম্যাচ করাতে পারবেন না।



মনে করুন আপনি একটা দোকানে গিয়েছেন সেখানে আপনি যা চাচ্ছেন সেটা তার কাছে নেই। তাহলে তো আপনি বের হয়ে আসবেন অবশ্যই। এখানেও ঠিক সেই কাজটাই হয়। সিস্টেমের সাথে ম্যাচ না হলে আপনাকে সফটওয়্যার রান করতেই দেবে না। ৩২বিট সিস্টেমের কিছু অসুবিধা আছে আর সেটা হল এটি ৪জিবি র‍্যামের বেশি ইউজ করতে পারে না। যদি ৩২বিট সিস্টেমে এর চেয়ে বেশি র‍্যাম লাগান তাহলে স্পিড এর কোন পরিবর্তন দেখতে পাবেন না। কিন্তু ৬৪বিট হলে পরিবর্তনটা নিজেই দেখতে পারবেন। উইন্ডোজ ১০ অফিসিয়ালি ২টেরাবাইট র‍্যাম সাপোর্ট করে। হোম এডিশনে ১২৮জিবি। যদিও তাত্ত্বিকভাবে ৬৪বিট সিস্টেমে র‍্যাম ধারনের লিমিট ১৬এক্সাবাইট কিন্তু এতো বড় র‍্যাম সাপোর্ট করার মত হার্ডওয়্যার এখনো তৈরি হয়নি। ভবিষ্যতে হয়ত আসবে। বর্তমানে ৬৪বিট সিস্টেমকে আরো ইম্প্রুভ করা হচ্ছে কারণ সবাই এখন ভাল পারফর্মেন্স আশা করে। ৬৪বিট হলেই যে ভালো পারফর্মেন্স পাবেন এমন কোন কথা নেই। কারন প্রসেসরের সাথে হার্ডওয়্যার বা মাদারবোর্ড কেও ভালো মানের হতে হবে। তবেই আপনি বেটার পারফর্মেন্স আশা করতে পারেন। সেটা মোবাইল বা কম্পিউটার যাই হোক না কেন



No comments

Powered by Blogger.